BUET – অনেকেই বলেন ‘The Land Of Dream’

বুয়েটের যাত্রাটা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শুরু হয়নি, বরং এর শুরুটা ছিল একটি সার্ভে স্কুল হিসেবে। ১৮৭৬ সালে ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশের সরকার পুরান ঢাকার নালগোলায় প্রতিষ্ঠা করে ‘ঢাকা সার্ভে স্কুল’। মূলত বাংলা অঞ্চলে ভূমি জরিপকারী তৈরি করাই ছিল এ স্কুলের মূল লক্ষ্য। সেসময় দু বছরের কোর্সে ভর্তি হতো ছাত্ররা। বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই ঢাকার নবাব পরিবারের খাজা আহসানউল্লাহ এই সার্ভে কলেজে বেশ বড় অংকের অনুদান দেন। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে খাজা সলিমুল্লাহও অনুদান দেয়া বন্ধ করেননি। মূলত তাদের প্রচেষ্টাতেই ১৯০৮ সালে ঢাকা সার্ভে স্কুল পরিণত হয় আহসানউল্লাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। খাজা আহসানউল্লাহর অবদানের কারণেই এই নামকরণ হয়। সিভিল, ইলেক্ট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স চালু হয় সেসময় থেকে।
১৯১২ সালে পুরান ঢাকা থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের ক্যাম্পাস আসে বর্তমান পলাশীর ক্যাম্পাসে। এই স্কুলের প্রিন্সিপাল হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা চলে যাবার পর আহসানউল্লাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পরিণত হয় আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে। হাকিম আলীই হন এ কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের অধীনে থাকা এ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে চালু হয় চার বছরের বিএসসি কোর্স। সিভিল, ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, কেমিক্যাল ও মেটালার্জিক্যাল- এ পাঁচটি বিভাগ ছিল সেসময়।
১৯৫১ সালে প্রিন্সিপাল হন টিএইচ ম্যাথিউম্যান। মাত্র তিন বছর পরেই তার স্থলাভিষিক্ত হন ড. এম. এ. রশীদ। তিনি ছিলেন এ কলেজের প্রথম বাঙালি প্রিন্সিপাল। ১৯৫৪ সাল থেকে পরের ১৬ বছর তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এগিয়ে গেছে দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হবার পথে। ১৯৫৬ সালে পুরাতন পাঠ্যসূচি পাল্টে নতুন পাঠ্যসূচি চালু হয় কলেজে।
উচ্চতর শিক্ষা এবং গবেষণার লক্ষ্যে পাকিস্তান সরকার ১৯৬২ সালে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করে। ১৯৬২ সালের ১ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা হয়ে পথ চলা শুরু হয় ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (ইপুয়েট)। এ দিনটিকেই বুয়েটের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয় প্রতিবছর। সার্ভে স্কুল থেকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হতে পাড়ি দিতে হয় ৮৬ বছর। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর ইপুয়েটের ইস্ট পাকিস্তান বদলে হয় বাংলাদেশ, ইপুয়েট পরিণত হয় বুয়েটে। প্রায় একশ বছর আগে প্রতিষ্ঠা হওয়া সার্ভে স্কুলটি পরিণত হয় সদ্য স্বাধীন একটি দেশের প্রকৌশল ও স্থাপত্যবিদ্যার অগ্রপথিক। আজ থেকে প্রায় একশত চল্লিশ বছর আগের ছোট্ট স্কুলটি আজ পরিণত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, যা মুখরিত থাকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর কলকাকলিতে।
অনুষদ ও বিভাগসমূহ
১৮৭৬ সালে শুধুমাত্র জরিপ কাজের সুবিধার্থে চালু হলেও সময় ও প্রয়োজনের খাতিরে বুয়েটে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন বিভাগ। বর্তমানে পাঁচটি অনুষদের অধীনে রয়েছে মোট ১৮টি বিভাগ। অবশ্য এই ১৮টি বিভাগের সবগুলোতেই স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি করানো হয় না। স্নাতক পর্যায়ে ১২টি বিভাগে ছাত্র-ছাত্রীরা ভর্তি হতে পারে এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের জন্য স্নাতক পর্যায়ের বিভাগগুলো ছাড়াও আরো পাঁচটি বিভাগ এবং কয়েকটি ইন্সটিটিউটে ছাত্র-ছাত্রীরা ভর্তি হতে পারে। অনুষদ অনুসারে বুয়েটের বিভাগগুলো জেনে নেয়া যাক:
- Faculty of Architecture and Planning
- Department of Architecture (Arch)
- Department of Urban and Regional Planning (URP)
- Department of Humanities (Hum)
- Faculty of Civil Engineering
- Department of Civil Engineering (CE)
- Department of Water Resources Engineering (WRE)
- Faculty of Engineering
- Department of Chemical Engineering (ChE)
- Department of Materials and Metallurgical Engineering (MME)
- Department of Chemistry (Chem)
- Department of Mathematics (Math)
- Department of Physics (Phys)
- Department of Petroleum and Mineral Resources Engineering (PMRE)
- Department of Glass and Ceramic Engineering (GCE)
- Faculty of Electrical and Electronic Engineering
- Department of Electrical and Electronic Engineering (EEE)
- Department of Computer Science and Engineering (CSE)
- Department of Biomedical Engineering (BME)
- Faculty of Mechanical Engineering
- Department of Mechanical Engineering (ME)
- Department of Industrial and Production Engineering (IPE)
- Department of Naval Architecture and Marine Engineering (NAME)
এ আঠারোটি বিভাগের মধ্যে Humanities বিভাগে কোনো পর্যায়েই ছাত্ররা ভর্তি হতে পারে না। গণিত, পদার্থ, রসায়ন, গ্লাস ও সিরামিকস ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পেট্রোলিয়াম ও মিনারেল রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং- এ পাঁচটি বিভাগে শুধুমাত্র স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তি হওয়া যায়। অন্য বিভাগগুলোতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তি হওয়া যায়। অবশ্য সম্প্রতি চালু হওয়া বায়োমেডিক্যাল বিভাগে এখনো স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তি চালু হয়নি।
বুয়েটের প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের রয়েছে নিজস্ব স্বকীয়তা, রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য। ১৯৪৭ সালে যখন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পরিণত হয় তখন বিভাগ ছিল মাত্র পাঁচটি, সেখানে আজ রয়েছে ১৮টি, যার মধ্যে ১৪টিই প্রকৌশল কিংবা স্থাপত্যবিদ্যার। সময়ের সাথে সাথে যুক্ত হয়েছে নতুন বিভাগ আবার অনেক বিভাগের নাম পাল্টে গিয়ে হয়েছে আরো আধুনিক।
গবেষণার জন্য বুয়েটে রয়েছে বেশ কয়েকটি ইন্সটিটিউট। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এগুলোতে ভর্তি হতে পারে। বুয়েটের ইন্সটিটিউটগুলো হলো:
- Institute of Water and Flood Management (IWFM)
- Institute of Appropriate Technology (IAT)
- Institute of Information and Communication Technology (IICT)
- Accident Research Institute (ARI)
- BUET-Japan Institute of Disaster Prevention and Urban Safety (BUET-JIDPUS)
- Institute of Nuclear Power Engineering (INPE)
বুয়েট ভর্তি সার্কুলার ২০২১-২২ Full DOWNLOAD
বুয়েট প্রয়োজনীয় বইসমূহ শিক্ষাবর্ষ ২০২১-২২ঃ
![]() |
![]() |
![]() |
![]() |
৪৬০ টাকা | ৪১০ টাকা | ৪১০ টাকা | ৪১০ টাকা |
![]() |
![]() |
![]() |
|
৪১০ টাকা | ১৫০ টাকা | ৩০০ টাকা |