বুয়েটে প্রথম শাফিন বললেন, ‘১৬-১৭ ঘণ্টা পড়া লাগবে না, সাফল্য পেতে দরকার অধ্যবসায় ও ইচ্ছাশক্তি’

সাফল্য পেতে হলে কী করতে হয়, আপনার কী মত

অধ্যবসায় ও ইচ্ছাশক্তি—এই দুটি সবচেয়ে বেশি দরকার। এই দুটিই সাফল্য পেতে আমাকে বেশি সাহায্য করেছে।

পড়ালেখার ক্ষেত্রে কি বিশেষ কোনো কৌশল ছিল

ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা ছিল আমার। এইচএসসিতে কোনো বিষয়ে যখন পড়তাম, ওটা নিয়ে গভীরে যেতে ইচ্ছা করত। এই কারণে বেশ কিছু বিষয়ে একধরনের গভীর বোঝাপড়া তৈরি হয়েছিল।

যারা আপনার মতো ভালো ফল করতে চায়, তাদের কী পরামর্শ দেবেন

১৬-১৭ ঘণ্টা পড়া লাগবে না। অল্প করে হলেও প্রতিদিনই পড়ার অভ্যাস করতে হবে। ছাড় দেওয়া যাবে না। একবার বিরতি পড়ে গেলেই আবার গতি ফেরানো কঠিন হয়ে যায়।

পড়াশোনার বাইরে আর কিসে আপনার আগ্রহ

২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। বাংলাদেশ ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াডে ২০১৯ সালে রুপা এবং ২০২০ সালে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলাম।

ভর্তি পরীক্ষার সময় কোন জিনিসটা ভুগিয়েছে

ভর্তি পরীক্ষার যে একটা প্রচণ্ড মানসিক চাপ থাকে, সেটা আমি সহ্য করতে পারতাম না। দেখা যেত, অনেক সময় কোনো কিছু না করে শুয়ে থাকতাম।

অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কার কাছ থেকে

আমার বড় ভাইয়া ছিলেন। তিনি এখন বুয়েটে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশলে পড়ছেন। ছোটবেলা থেকে ভাইয়াকে দেখে আসছি, অনেক বেশি পরিশ্রম করে। ভাইয়া যে পথ বা রুটিন অনুসরণ করেছে, আমি মোটামুটি সেটাই অনুসরণ করে এত দূর এলাম।

বুয়েটে কী নিয়ে পড়বেন?

কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল নিয়ে পড়তে চাই। ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, কোডিংয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল। তারপর সেটা কম্পিটেটিভ প্রোগ্রামিংয়ে শিফট হয়ে যায়। সেখান থেকেই ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করা।

মা-বাবার অনুপ্রেরণা তো নিশ্চয়ই ছিল?

অবশ্যই। তাঁরাই তো সবার আগে। মা-বাবা কোনো দিন আমার আগ্রহের বিষয় অনুসরণ করতে মানা করেননি। এইচএসসির আগে আমি শুধু অলিম্পিয়াড নিয়েই পড়াশোনা করতাম। অনেক সময় দেখা যেত, একাডেমিক পড়া বাদ দিয়ে দিনে ৫-৬ ঘণ্টা অলিম্পিয়াডের সমস্যা সমাধান করেছি। ওই সময়ও আব্বু-আম্মু কিছু বলতেন না। সব সময়ই তাঁরা আমার শখকে প্রাধান্য দিয়েছেন।

আপনার ভালো রেজাল্টের পেছনে অলিম্পিয়াডের কোনো প্রভাব ছিল?

অলিম্পিয়াড একাডেমিকের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত না হলেও অলিম্পিয়াডের সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো, এটা আপনাকে অন্যভাবে চিন্তা করতে শেখায়। এই অন্যভাবে চিন্তা করার ব্যাপারটাই বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, যেমন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় কাজে দেয়। অনেক কঠিন প্রশ্ন থাকে, যেগুলো আগে কোথাও আসেনি, সেগুলো সমাধান করা হয়ে যায়।

ভবিষ্যতে কী হতে চান?

একজন সফল সফটওয়্যার প্রকৌশলী হতে চাই। এটাই আমার আগ্রহের জায়গা। আগ্রহটাই যদি পেশায় রূপান্তর হয়, আমার মনে হয় জীবনটা আনন্দে কাটবে।

Eadmin

Related post