কৃষি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

 কৃষি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
দেশের নয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল অনেক আগেই। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ভর্তি পরীক্ষা পিছিয়ে আগামী ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদী। কৃষি  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখা শিক্ষার্থীদের জন্য নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ  কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান সজীব

প্রশ্নব্যাংক সমাধান
কৃষি গুচ্ছ পদ্ধতি পরীক্ষার মানবণ্টন বুঝতে হলে  প্রশ্নব্যাংক বিশ্লেষণ করে প্রস্তুতি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে অন্তত বিগত পাঁচ বছরের সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো সমাধান করতে পারেন। এর মধ্য দিয়ে নিজেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে বুঝতে পারবেন। এ ছাড়া পরীক্ষায় শতকরা ৪০ শতাংশ বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে পুনরাবৃত্তি হয়।

বিষয় ভিত্তিক পরামর্শ
জীববিজ্ঞান: পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময়ের পরিমাণ খুব কম। তাই জীববিজ্ঞান বিষয়টি দিয়েই সময় বাঁচানোর পাশাপাশি বেশি নম্বর পেতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন যেন ভুল কম হয়। উত্তর ভুল হলে নম্বর কাটা যাবে।

রসায়ন: রসায়ন বিষয়ে বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন থেকে অনেক প্রশ্ন এসেছে। তাই অনুশীলনীর প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়ুন এবং এর মধ্য দিয়ে পাঠ্য বইয়ের ওপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে। পাঠ্যবই হিসেবে ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারী ও অধ্যাপক হারাধন নাগের লেখা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের  রসায়ন প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র বই এবং কৃষি বিচিত্রা বইটি অনুসরণ সহায়ক হতে পারে।

পদার্থ বিজ্ঞান: পদার্থ বিজ্ঞানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গণিতের ওপর প্রশ্ন আসে। পাশাপাশি তত্ত্ব থেকে প্রশ্ন আসে দুই থেকে তিনটি। এ বিষয়ের একক, মাত্রাগুলো ভালো করে পড়বেন।

গণিত: গণিতের ক্ষেত্রে সূত্রগুলো আয়ত্ত করা খুব জরুরি। ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে দেয় না। তাই গণিতের সব হিসাব ক্যালকুলেটর ব্যবহার বাদে করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ইংরেজি: ইংরেজিতে সচরাচর ‘vocabulary, synonym, antonym, preposition, article’ বিষয়েই বেশি প্রশ্ন আসে।

কৃষি গুচ্ছ পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির জন্য কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ
সারসংক্ষেপ তৈরি: পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সংক্ষিপ্ত নোট তৈরি করুন। এর মধ্যে তত্ত্বের মূল পয়েন্ট, সূত্র ও গুরুত্বপূর্ণ ডায়াগ্রাম বা নকশা থাকতে পারে।

পরিকল্পনা ও সময় ব্যবস্থাপনা: পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে সময়ের সঠিক ব্যবহারের জন্য দৈনিক একটি রুটিন তৈরি করুন। প্রতিদিন কত সময় পড়াশোনা করবেন, কোন বিষয়ে কতটুকু সময় ব্যয় করবেন–সেই পরিকল্পনা আগে থেকেই ঠিক করে নিন।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পুনরাবৃত্তি: বিগত বছরের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ও প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে জেনে নিন। প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আগে বারবার পুনরাবৃত্তি হওয়া বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে পড়ুন।

সহায়ক বই ও রিসোর্স অনুসরণ: পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি সহায়ক বই, অনলাইন ভিডিও লেকচারের মতো রিসোর্স অনুসরণ করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত রিসোর্স ব্যবহারে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় অংশগুলো ব্যবহার করতে হবে।

দুর্বলতায় মনোনিবেশ: যেসব বিষয়ে আপনি কিছুটা দুর্বল, সেই বিষয়গুলোতে বাড়তি মনোযোগ দিয়ে যথা সম্ভব দুর্বলতা কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন।

সংক্ষিপ্ত বিরতি: পড়াশোনার মাঝে ছোট বিরতি নিন। এর মধ্য দিয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়।

মক টেস্ট: কয়েকটি সম্পূর্ণ মক টেস্ট দিন। এটি সময় ব্যবস্থাপনায় উন্নতিসহ পরীক্ষা পরিস্থিতির জন্য আপনাকে প্রস্তুত করে তুলবে।

দলগত পড়াশোনা: বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হয়ে দলগত ভাবে পড়াশোনা করতে পারেন। এটি আপনার জ্ঞান ভাগসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে।

পরীক্ষার নির্দেশনা ও নিয়মাবলি: ভর্তি পরীক্ষার নির্দেশনা ও নিয়মগুলো ভালোভাবে পড়বেন।

শেষ মুহূর্তের বিশেষ পরামর্শ
»    পরীক্ষার আগে নিজের সিলেবাস ভালোভাবে পর্যালোচনা করুন।
»    পরীক্ষার আগে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করবেন না। এটি শুধু আপনার মানসিক চাপ বাড়াবে।
»    পরীক্ষার দিনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগে থেকেই গুছিয়ে রাখুন।

পরীক্ষার দিন করণীয়: পরীক্ষার দিন একটু আগে ভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন। পরীক্ষা শুরুর আগে ঠান্ডা মাথায় প্রশ্নপত্র পড়বেন ও সহজ প্রশ্নগুলোর উত্তর আগে করবেন। সবশেষে সময়ের প্রতি খেয়াল রেখে রাখবেন।

Eadmin

Related post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *