একসময় মানুষ পড়তে জানত না, লিখতে জানত না; কিন্তু এখন মানুষ শিক্ষিত তবুও…………………..

বোধগম্য একজন মানুষ ছোট বাচ্চাদের দিয়ে শেখাচ্ছে অপরাধপ্রবণতা। বাচ্চারা জড়িয়ে পড়ছে নানা রকম অপকর্মে। তৈরি হচ্ছে কিশোর গ্যাং। একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে হয়ে গিয়েছে একক পরিবার। বলা হয়ে থাকে, এখন নাকি মানুষ এক-দুজনও এক ছাদের নিচে একসঙ্গে বসবাস করতে পারছে না। মা-বাবা বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে ফেলে আসার ঘটনা অহরহ ঘটছে। বাচ্চারা আজকাল খেলাধুলা ভুলেই গিয়েছে স্মার্টফোন ও গ্যাজেটের আসক্তিতে। অধিকাংশ মা-বাবাও কান্না থামাতে বা খাবার খাওয়াতে শিশুদের হাতে গ্যাজেট তুলে দিচ্ছেন।
দুর্নীতি, ধর্ষণ, অন্যের অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি ত্রাণ দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ না করা, ক্ষমতাধর ব্যক্তির পরিচয়ে নানা জায়গায় নানা সুবিধা হাসিল ইত্যাদি আজকাল সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিস্তার করছে। বিয়েকে কঠিন করায় বাড়ছে অবৈধ সম্পর্ক। সেখান থেকে ঘটছে অপহরণ, ধর্ষণ, আত্মহত্যা, খুন ইত্যাদি জঘন্য ঘটনা। কৃষক, শ্রমিক, মজুর পাচ্ছেন না ন্যায্য মূল্য। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সিন্ডিকেটের জাঁতাকলে পিষ্ট আজ সমাজ।
অনেকে এগুলোর পেছনের কারণ হিসেবে শিক্ষাকে দায়ী করে থাকেন। তাঁরা ধারণা পোষণ করেন, মানুষ যত শিক্ষিত হচ্ছে, তত ছলচাতুরী আর প্রতারণা শিখছে। আসলে কি শিক্ষাই দায়ী আজকের এই সমাজের মানুষের নানা প্রতারণার কৌশল রপ্ত করা ও সমাজভাঙনের এই নির্মম বাস্তবতার জন্য? না, শিক্ষা নয়, বরং সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, নীতিনৈতিকতার অভাবের কারণে আজ সমাজে নানা অসুখের তীব্রতা বেড়েছে। যে অসুখে সমাজ, জাতি, দেশ পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। সমাজের কোথাও কেউ আজ ভালো নেই। ভালো নেই আমাদের বাবা-মায়েরা। সন্তানকে বাইরে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না তারা। সমাজের এই ভাঙন দূর করতে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কোনো বিকল্প নেই। বাড়াতে হবে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষা। সব ধর্মেই ভালো কাজের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মূল্যবোধের অবক্ষয় দূর করতে সভা ও সেমিনার করতে হবে, বাড়াতে হবে সচেতনতা। যোগ্য ও সৎ লোককে দায়িত্বশীল স্থানে বসাতে হবে। তবেই সমাজভাঙনের এই তীব্র অসুখ দূর করা সম্ভব হবে। অন্যথায় সমাজে অপকর্মের হার বেড়েই চলবে।